আজকের ডিজিটাল যুগে, সফল মার্কেটিংয়ের চাবিকাঠি হলো কন্টেন্ট। আপনি হয়তো শুনেছেন, “কন্টেন্ট ইজ কিং”। কিন্তু এই কথাটা কতটা সত্যি, তা আজ আমরা বিশ্লেষণ করবো।

কন্টেন্ট মার্কেটিং হলো এমন একটি কৌশল যেখানে আপনি আপনার লক্ষ্যবস্তু গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য মূল্যবান এবং সুসংবাদিত তথ্য প্রদান করেন। এটি শুধু পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের চেয়ে অনেক বেশি। এটি আপনার ব্যবসাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে এবং গ্রাহকদের সাথে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

আপনি কি জানেন? কন্টেন্ট মার্কেটিং অন্যান্য মার্কেটিং কৌশলের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী। এটি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর একটি দুর্দান্ত উপায় এবং আপনার ব্র্যান্ডকে প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করে তুলতে পারে।

শুরুতে আমরা কন্টেন্ট মার্কেটিং সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই –

কন্টেন্ট মার্কেটিং কি?

কন্টেন্ট মার্কেটিং হলো একটি কৌশল যার মাধ্যমে একটি ব্যবসা তার গ্রাহকদের সাথে মূল্যবান ও আকর্ষণীয় তথ্য শেয়ার করে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া যার মূল লক্ষ্য হল গ্রাহকদের সাথে একটি গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তাদেরকে ব্র্যান্ডের প্রতি আকৃষ্ট করা। সহজ কথায়, কন্টেন্ট মার্কেটিং হলো গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা।

কন্টেন্ট মার্কেটিং কৌশল কী?

কন্টেন্ট মার্কেটিং কৌশল হলো একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে কোনো ব্যবসা বা সংস্থা তাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে এবং তাদের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করে এবং পরিচালনা করে। এতে গ্রাহকদের চাহিদা, আগ্রহ এবং ব্যবহারের ধরন বিশ্লেষণ করে তাদের কাছে প্রাসঙ্গিক এবং মূল্যবান কন্টেন্ট তৈরি করা হয়। এই কন্টেন্টগুলো বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৌশলগতভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয় যাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়।

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের বিভিন্ন রূপ

আমরা এতক্ষণ কন্টেন্ট মার্কেটিং কী, সেটা সম্পর্কে জেনেছি। এবার জানবো, কন্টেন্ট মার্কেটিং কত প্রকারের হয় এবং সেগুলো কী কী। মূলত কন্টেন্ট মার্কেটিংকে চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায় ।

লিখিত বা রিটেন কন্টেন্ট মার্কেটিং

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের অন্যতম কাজের মধ্যে একটি হলো – লিখিত বা রিটেন মার্কেটিং। মূলত এই মার্কেটিংয়ে, লেখার মাধ্যমে পণ্য ও সার্ভিস-সমূহ ব্যাখ্যা করা হয় এবং গ্রাহকদের কাছে আকর্ষণীয় রূপে তুলে ধরা হয় । 

ধরুন, আপনাকে একটি দোকানের পণ্যের মার্কেটিং করার দায়িত্ব দেওয়া হলো । এখন আপনি এই পণ্য সম্পর্কে একটি লিখিত বক্তব্য সাজিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনার মতামত শেয়ার করে দিতে পারেন । ফলে অনেক ব্যক্তিরা এই লেখাটি পড়বে এবং এই পণ্যটি কেনার প্রতি আকৃষ্ট হবে ।

ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং

এই বাক্যটি থেকে স্পষ্ট যে, এখানে ভিডিও-কেন্দ্রিক এক প্রক্রিয়ার কথা বলা হচ্ছে। মূলত, গ্রাহকদের মন জয় করার লক্ষ্যে কোনো নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবার উপর ভিত্তি করে একটি আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করা হয়ে থাকে। এরপর এই ভিডিওটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াকেই ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং বলা হয়।

অডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং

ঠিক আগের মতই কিন্তু এখানে, কোন একটি নির্দিষ্ট পণ্যের তথ্য, একটি অডিও ফাইলের মাধ্যমে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং শ্রোতারা এই তথ্যটি শুনে পণ্যটির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং অবশেষে পণ্যটি কিনে নেয়। এভাবেই অডিও কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে পণ্যের প্রচার করা হয়।

ইমেজ কন্টেন্ট মার্কেটিং

তৈরিকৃত পণ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে একটি সুন্দর ব্যানার বা ছবি তৈরি করা হয়, যাকে আমরা ইমেজ বলে থাকি । এই ইমেজটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে মানুষ পণ্যটি দেখে এটি কেনার প্রতি আকৃষ্ট হয় । এই মার্কেটিংকেই ইমেজ কন্টেন্ট মার্কেটিং বলা হয় ।

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের ইতিহাস

কন্টেন্ট মার্কেটিং শুনলে মনে হয় এটা আজকের দিনের একটা নতুন ধারণা। কিন্তু আসলে এর ইতিহাস অনেক পুরনো। যদি আপনি জানেন যে এই ধারণাটা কতদিন ধরে ব্যবহার হচ্ছে, তাহলে হয়তো আপনিও আমার মতো অবাক হবেন।

সবচেয়ে প্রাচীন উদাহরণ হিসেবে আমরা বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিনকে উল্লেখ করতে পারি। ১৭৩২ সালে তিনি তার লেখা ‘পুয়ার রিচার্ডস অ্যালম্যান্যাক’ বইতে একটা প্রিন্টিং প্রেসের মার্কেটিং করেছিলেন। আজকের দিনে যে ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিগুলো আমরা দেখি, তার মূল ধারণাটা সেখানেই ছিল। তাই ফ্র্যাঙ্কলিনকেই কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের জনক বলা হয়।

এরপর ১৮৯৫ সালে John Deere কোম্পানি একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করে। ম্যাগাজিনটির নাম ছিল “দ্য ফারো”। এই ম্যাগাজিনটি কৃষকদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যেখানে কৃষিকাজ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেওয়া হতো।

এই দুইটি উদাহরণ থেকেই বোঝা যায় যে কন্টেন্ট মার্কেটিং কোনো নতুন ধারণা নয়। শতাব্দী ধরে মানুষ এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছে।

ব্যবসার জন্য কেন প্রয়োজন কন্টেন্ট মার্কেটিং ? 

আপনাদেরকে আরো ভালোভাবে বুঝাতে, একটা উদাহরণ দেই। “State of Inbound” এর একটা সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫৩% মার্কেটার “কন্টেন্ট মার্কেটিং” কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন। এখন হয়তো আপনারা ভাবছেন, কন্টেন্ট মার্কেটিং আসলে কী? কেন এটা এতো জনপ্রিয়? আসলে কন্টেন্ট মার্কেটিং কী, তা জানার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল, কীভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং আপনার ব্যবসার জন্য কাজে লাগবে, সেটা জানা।

মূলত, কন্টেন্ট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি সাধারণ মানুষকে কীভাবে আপনার পণ্য বা সেবার গ্রাহক করে তুলবেন, সেটাই হল মূল কথা। আর এই সাধারণ মানুষকে গ্রাহক করে তুলতে আপনাকে চারটি মূল ধাপ অনুসরণ করতে হবে।

অবগত করা (Awareness)

এই পর্যায়ে পণ্য সম্পর্কে সাধারণ ধারণা দেওয়ার মাধ্যমে পাঠকদের আগ্রহ জাগানো হয়। একবার পণ্য সম্পর্কে তাদের মনে কৌতূহল জন্মালে, তারা এর বিষয়ে আরও জানতে উৎসুক হয়ে ওঠে। এই পর্যায়ে ক্রেতা এখনও কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিশ্চিত নয়। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। এই পর্যায়ের প্রধান লক্ষ্য হলো, পণ্যটি নিয়ে তাদের মধ্যে একটা আকর্ষণ সৃষ্টি করা।

রিসার্চ (Research) 

যখন একজন পাঠক কোনো পণ্যের নাম শোনে বা মনের কোণে একটি ধারণা জন্ম নেয়, তখন সেই পণ্য তার কৌতূহল জাগিয়ে তোলে। আর তখন তার মনে জাগে সেই পণ্য সম্পর্কে আরও জানার তীব্র ইচ্ছা। এই জানার পিছনে কারণ হলো, হয়তো সেই পণ্যটি কেনার চিন্তা তার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। যখন কেউ কোনো পণ্য কিনার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেই পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুঁজতে শুরু করে। অর্থাৎ সেই পণ্য সম্পর্কে গভীরভাবে ভাবনাচিন্তা করে। যেমন, কোন আইফোন তার জন্য উপযুক্ত হবে, বা তার বাজেটের মধ্যে কোন মডেলটি কেনা সম্ভব—এসব নিয়ে সে বিশ্লেষণ করতে শুরু করে।

বিবেচনা (Consideration)

ই পর্যায়ে পৌঁছে গেলে, ক্রেতা গ্রাহকের সম্পূর্ণ তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে তুলনা করে যখন তারা একটি পণ্য নির্বাচন করেন, তখন দামের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ও বিবেচনা করেন। তারা মূল্যায়ন করেন যে কোন পণ্যটি তাদের বাজেটের মধ্যে পড়বে এবং কোনটি থেকে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, তারা সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে কোথা থেকে পণ্যটি কিনতে পারবেন, সেই বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেন।

কেনা (Buy)

এই পর্যায়ে, তারা নিজেদের জন্য উপযুক্ত পণ্য খুঁজে পায়। অর্থাৎ একটি পণ্য বিক্রয় করতে হলে গ্রাহককে এই ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ ধাপের মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। আর কন্টেন্ট মার্কেটিং এই প্রক্রিয়াকেই কেন্দ্র করে কাজ করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে, যেকোনো ব্যবসার ক্ষেত্রেই কন্টেন্ট মার্কেটিং কৌশল কতটা কার্যকরী।

অনলাইন ব্যবসার জন্য ১০ টি সেরা কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্রাটেজি:

এতক্ষণ আমরা কন্টেন্ট মার্কেটিং এর মূল কথাগুলো জানলাম। এবার আসল কাজে নামার পালা। অনলাইন ব্যবসাকে বড় করতে কন্টেন্ট মার্কেটিং কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই কৌশলগুলো জেনে নেওয়া যাক।

আকর্ষনীয় প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন 

কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের সফলতার চাবিকাঠি হলো কার্যকর লেখা। অনেকেই কোনো পণ্য কেনার আগে সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে লেখা রিভিউ পড়েন। তাই আপনার ব্যবসার জন্য অনন্য এবং আকর্ষণীয় লেখা তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষ লেখকদের নিয়োগ করে আপনি আপনার পণ্য বা সেবার বিশদ বর্ণনা দিতে পারেন এবং গ্রাহকদের মন জয় করতে পারেন। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত লেখা পোস্ট করে আপনি আপনার ব্যবসাকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।

প্রোডাক্ট ডেমোন্সট্রেশন

আপনার পণ্য ও সেবার মূল বৈশিষ্ট্যগুলোকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে একটি আকর্ষণীয় প্রোডাক্ট ডেমোন্সট্রেশন ভিডিও তৈরি করুন। আজকাল সবাই ভিডিও দেখতে পছন্দ করে, তাই এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আপনার পণ্যের গুনগুন এবং ব্যবহারের সহজ উপায়গুলো দর্শকদের সামনে তুলে ধরুন। ভিডিওর মাধ্যমে আপনার পণ্যের মান, ব্যবহার এবং উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিন। দর্শকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দিন। কেন আপনার সেবা অন্যদের চেয়ে ভালো, সে সম্পর্কে যুক্তিপূর্ণ কারণ উপস্থাপন করুন। পণ্যের সঠিক বর্ণনা দিন এবং দর্শকদের মতামত জানানোর জন্য কমেন্ট বক্স খোলা রাখুন। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিন এবং পণ্যটি কীভাবে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশাবলী দিন।

ব্লগ ভিডিও

কন্টেন্ট মার্কেটিংকে আরও শক্তিশালী করার একটি দারুণ উপায় হলো – ব্লগ ভিডিও। একটি ব্লগ হলো এমন এক জাদুর মতো জায়গা, যেখানে আপনি যেকোনো কথা সহজেই সবার সামনে তুলে ধরতে পারেন অথবা আপনার পণ্যের জৌলুস দেখাতে পারেন। আজকাল সবাই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভিডিও দেখতে পছন্দ করে, বিশেষ করে যখন সেটা কোনো জনপ্রিয় ব্যক্তির। তাই যে কোনো ব্লগারই ব্লগ ভিডিওর মাধ্যমে তাদের ব্যবসাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন।

গুগল মাই বিজনেসের (Google My Business) ব্যবহার

গুগল মাই বিজনেস হলো সবচেয়ে জনপ্রিয়, বিনামূল্যের একটি মাধ্যম, যার সাহায্যে যেকোনো ছোট ব্যবসা খুব সহজেই অনলাইনে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে। আপনি এখানে একটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যের প্রোফাইল তৈরি করে আপনার ব্যবসার সকল তথ্য গ্রাহকদের সামনে তুলে ধরতে পারেন। এছাড়াও, আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে আপনার বিক্রয় বাড়াতে পারেন।

এসইও (SEO) ফ্রেন্ডলি কন্টেন্ট 

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশান বা SEO হলো আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে উপরে দেখানোর একটি কৌশল। সহজ করে বললে, এটি হলো আপনার কন্টেন্টকে গুগল, ইয়াহু, বাংলাসার্চের মতো সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে সবার আগে দেখানোর একটি উপায়।

আপনি যদি চান যে, আপনার ব্যবসা বা ব্লগ সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পৃষ্ঠায় দেখা যাক, তাহলে আপনাকে এমন কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে যা সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযোগী। এজন্য কন্টেন্ট লেখার আগে আপনাকে ভালোভাবে গবেষণা করে কিছু নির্দিষ্ট শব্দ বা বাক্যাংশ (কিওয়ার্ড) বের করতে হবে এবং সেগুলো আপনার কন্টেন্টে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।

ব্র‍্যান্ড ভিডিও কন্টেন্ট

ভিডিও কন্টেন্ট বর্তমানে কন্টেন্ট মার্কেটিং জগতে এক অত্যন্ত জনপ্রিয় কৌশল। আপনার পণ্য বা সেবার একটি আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করে আপনি সহজেই অনেকের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। এই ভিডিওতে আপনার দর্শকদের কাছে আপনার ব্র্যান্ডের একটি স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করুন। মজার, শিক্ষণীয়, অথবা অনুপ্রেরণামূলক যে কোনো ধরনের ভিডিও তৈরি করতে পারেন। তৈরি করা ভিডিওটি ফেসবুক গ্রুপ, ইউটিউব চ্যানেল, টিকটকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করুন।

ব্র‍্যান্ডের সাফল্য ও ব্যর্থতার গল্প

অনেকেই ভাবেন যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তারকারা আসলে আমাদের মতো নয়। কিন্তু সত্যিটা হল, তারাও আমাদের মতোই মানুষ। আপনার ব্যবসার পেছনের গল্প, আপনার উত্থান-পতন, আপনার দর্শকদের সাথে ভাগ করে নিন। আপনার অনুসারীদের মতামতকে গুরুত্ব দিন, তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আপনার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে একটি ভিডিও আপলোড করুন। এটি আপনার অনুসারীদের সাথে আপনার বন্ধন আরও মজবুত করবে এবং আপনার ব্যবসার দৃশ্যমানতা বাড়াবে। আপনি নিজে না চেষ্টা করে বুঝতে পারবেন না যে এই কৌশলগুলো কতটা কার্যকরী।

ট্রেন্ড ফলো করা 

সোশ্যাল মিডিয়া এখন ট্রেন্ডের সমুদ্র। এই সমুদ্রে ভাসতে না জানলে ডুবে যাওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। তাই আপনার ব্র্যান্ডকে টিকিয়ে রাখতে হলে এই ট্রেন্ডগুলোকে খুব কাছ থেকে অনুসরণ করতে হবে। ট্রেন্ডিং বিষয় নিয়ে ভিডিও, লেখা, ছবি সব কিছু তৈরি করুন। এতে করে আপনার ব্র্যান্ডের সাথে দর্শকদের একটি গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠবে। কারণ আজকের দিনে সবাই নতুনত্ব খুঁজে চলে, আর ট্রেন্ডই তো সেই নতুনত্বের প্রতীক।

পেছনের গল্প শেয়ার

আপনার দৈনন্দিন কাজের ছবিগুলো মাঝে মাঝে লাইভে শেয়ার করুন। এই কন্টেন্ট মার্কেটিং কৌশলটা খুব সহজ হলেও অসাধারণ ফল দেয়। আপনাকে কোনো নতুন কাজ করার দরকার নেই, শুধু আপনার নিয়মিত কাজগুলোই দর্শকদের সাথে ভাগ করে নিন। এইভাবে আপনি দর্শকদের সাথে একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের সন্দেহ দূর করতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এর সঠিক ব্যবহার

সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়ে আপনার কন্টেন্ট প্রচার করুন। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার কোম্পানির নামে Facebook Page, Tiktok ID, Instagram Profile, YouTube Channel তৈরি করুন, এবং আপনার ভিডিও ও লিখিত কন্টেন্টগুলো প্রচার করুন। এক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার কন্টেন্ট অন্যান্য কন্টেন্টের তুলনায় আরো আকর্ষণীয় ও জ্ঞানবহ হয়, তাহলে আপনি আপনার লক্ষ্যবস্তু গ্রাহকদের কাছে খুব কম সময়ের মধ্যে সহজেই পৌঁছাতে পারবেন।

দ্রুতগতির এই ডিজিটাল জগতে কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্রাটেজি সকল ব্যবসার জীবনরেখা। আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, ছোট বা বড় যেকোনো ব্যবসার প্রচার করতে এবং অল্প সময়ের মধ্যে বেশি বেশি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্রাটেজির বিকল্প কিছুই নেই। আপনি যদি উপরের কন্টেন্ট মার্কেটিং কৌশলগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগ করেন, তাহলে আপনি আপনার ব্র্যান্ডের সুনাম বাড়াতে পারেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে আপনার বিজনেস বড় করতে পারেন। কিন্তু কন্টেন্ট মার্কেটিং আইডিয়ার পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সততা। যেকোনো কন্টেন্ট মার্কেটিং আইডিয়া কাজে লাগানোর সময় সততা এবং সঠিক শ্রম দিন, তাহলে সফলতা অবশ্যই পাবেন ইন শা আল্লাহ।

প্রয়োজনীয় আরও কিছু ব্লগ – 

১। https://blog.bitcommerz.com/the-power-of-influencer-marketing-in-e-commerce-boosting-brand-visibility/ 

২। https://blog.bitcommerz.com/the-power-of-email-marketing-in-ecommerce-strategies-for-success/  

৩। https://blog.bitcommerz.com/product-photography-tips-for-ecommerce-beginners/ 

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *